গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

মারুফা জামান, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরে ভুট্টা ক্ষেত ভালো হয়েছে দেখে কৃষকরা বেজায় হাসিখুশি। ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে চাষিরা আশাবাদী। জানা যায়, তামাকের জন্য গঙ্গাচড়া উপজেলা সুপরিচিত। তামাক ব্যবহারে মরণব্যাধি ক্যানসার, যক্ষ্মা, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সমস্যাসহ স্বাস্থ্যের নানাবিধ রোগব্যাধি হয় জানা সত্ত্বেও তামাক বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় বলে এ উপজেলার কৃষকেরা আগে প্রচুর পরিমাণে তামাক উৎপাদন করতো। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলে তামাকের চাষ হতো সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সরকারি-বেসরকারিভাবে তামাকের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সভা-সেমিনার, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, কৃষি অধিদপ্তরের সুপরামর্শ ও সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকেরা চাষাবাদে পরিবর্তন আনতে শুরু করে। জানা যায়, ‘৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকেরা তামাকের উৎপাদন সীমিত করে ধান ও গমের পাশাপাশি ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষে ঝুঁকে পড়ে। আর এসব ফসল তিস্তার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হতে দেখা যায়। বিশেষ করে ভুট্টা চাষে স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায় দেখে এ অঞ্চলের কৃষকেরা তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকে পড়ে। আর এভাবে দিন দিন সবার মাঝে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েই চলেছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের উত্তর কোলকোন্দ গ্রামের তিস্তার চরে ভুট্টা গাছে গাছে ফুল এসেছে। সেখানকার ভুট্টা ক্ষেত পরিচর্যারত চাষি আব্দুল কাদের ও ইলিয়াস আলী জানান, তারা আগে ১০/১২ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করতো। তামাকে খুব পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া তামাক চাষ করার ফলে রোগ-বালাই বেশি হতো। তাই এখন তারা তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। চলতি মৌসুমে তারা ৬/৭ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছে। একই কথা বলেন চিলাখাল চরের সুলতান ও বিনবিনার জাকারিয়া ইসলাম।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৩ হাজার ১ শত  ৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, ভুট্টায় কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমরা সবসময় কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। ফলে ভুট্টা চাষে তাদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, ভুট্টায় খরচ অনেক কম কিন্তু দাম অনেক ভালো। সেই সঙ্গে ভুট্টার গাছ ও খড়কুটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাজারে ভুট্টার চাহিদাও বেশি। সুতরাং ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল।

আপনি আরও পড়তে পারেন